পাঞ্চ হোল ডিসপ্লে এবং ট্রিপল ক্যামেরা নিয়ে এলো নোকিয়া এক্স৭১
অবশেষে অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ব্যাপক লিক এর পর মাত্র দুদিন আগে তাইওয়ানে অনেকটা নীরবেই উন্মুক্ত হলো নোকিয়ার নতুন মিডরেঞ্জ স্মার্টফোন নোকিয়া এক্স৭১। এইচএমডি গ্লোবাল নোকিয়া ফোন ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচার করা শুরুর পর থেকেই তারা সাধারণত তাদের মিডরেঞ্জ ফোনগুলো প্রথমে চীন, তাইওয়ান কিংবা হংকং এ নামের সাথে এক্স যোগ করে তাদের চাইনিজ রম ইন্সটল উন্মুক্ত করে। পরে সুযোগ বুঝে সেটা চীনের বাহিরে গ্লোবালি বিক্রি শুরু করে গ্লোবাল রম দিয়ে। ধারনা করা যাচ্ছে এক্স৭১ এর ক্ষেত্রেও এমনটাই হতে যাচ্ছে। স্পেসিফিকেশন দেখে বলা যায় এটা হয়তো গ্লোবালি তারা নকিয়া ৮.১ প্লাস নামে বাজারজাত করতে পারে।
স্মার্টফোনটি সম্পূর্নভাবেই ২০১৯ সালের মিড রেঞ্জ স্পেসিফিকেশন নিয়ে এসেছে। তবে চমকের ব্যাপার হচ্ছে এতে থাকছে হালের ট্রেন্ড “পাঞ্চহোল” ক্যামেরা। এটাই নোকিয়ার প্রথম পাঞ্চ হোল ক্যামেরা ফোন এবং বলতে গেলে এখনও পর্যন্ত নোকিয়ার সবচেয়ে সুন্দর ফোনগুলোর একটি। এতে রয়েছে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৬৬০ চিপসেট, আর ৬ জিবি র্যাম। ৬.৩৯ ইঞ্চি ফুল এইচডি প্লাস আইপিএস ডিসপ্লের ফোনটিতে প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য পাবেন ১২৮ জিবি পর্যন্ত ইনবিল্ট স্টোরেজ। রিয়ার ক্যামেরা হিসেবে তিনটি সেন্সরের কম্বো বা ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি হলো এফ/১.৮ এপারচার এর ৪৮ মেগাপিক্সেলের “জাইস” ব্র্যান্ডেড মেইন সেন্সর। এর সাথে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল ১২০ ডিগ্রি ফিল্ড অফ ভিউ এর আলট্রা ওয়াইড ও ৫ মেগাপিক্সেল এর একটি ডেপথ সেন্সর। এর পাঞ্চ হোলে আছে এফ/২.০ এপারচার এর একটি ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা।
স্পেসিফিকেশন এর দিক থেকে বাজারের অন্যান্য মিডরেঞ্জ গুলো থেকে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই এটি। এর ক্যামেরাকে কম আলোতে ভালো ছবি তোলার জন্য বিশেষভাবে টিউন করা হয়েছে। সাথে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার তো থাকছেই। ফোনের ব্যাটারি হিসেবে আছে ৩৫০০ মিলিএম্প এর লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি ও একে চার্জ দেয়া এবং ডেটা ট্রান্সফার এর জন্য নিচের দিকে আছে ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট। মজার ব্যাপার হচ্ছে আলাদা নোটিফিকেশন এলইডি ব্যবহার না করে এর পাওয়ার বাটনে লাইট ব্রিদিং ফাংশন দেয়া হয়েছে যা নোটিফিকেশন আসলে জ্বলবে-নিভবে। ফোরজি, ব্লুটুথ ৫.০, এসি ওয়াইয়াফাই সহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই থাকছে এতে। এমনকি এতে নকিয়ার “ওজো” ব্র্যান্ডেড সারাউন্ড সাউন্ড সম্বলিত ৩.৫ মিলিমিটার অডিও পোর্ট ও পাবেন। তবে এই রেঞ্জের নতুন ফোনগুলো ইন ডিসপ্লে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর নিয়ে আসলেও এক্স৭১ এ তা পাচ্ছেন না।
গ্লাস ব্যাক আর মেটাল ফ্রেম এর স্যান্ডউইচ ডিজাইনের এই ফোনটি নোকিয়ার অন্যান্য ফোনের মতোই ডিউরেবল হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ৭.৯৮ মিমি পুরুত্বের এই ফোনের ওজন ১৮০ গ্রামের মতো। স্টক এন্ড্রয়েড ৯.০ পাই চালিত এই ফোনটি তাইওয়ানে সামনের সপ্তাহ থেকে ১১,৯০০ তাইওয়ানিজ ডলারে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করলে এর দাম দাঁড়ায় ৩২০০০ টাকার মতো। যদিও তাদের জনপ্রিয় মডেল নোকিয়া এক্স৭ থেকে কিছু দিকে পিছিয়েই আছে নতুন এক্স৭১। নোকিয়া লাভারদের মন জয় করে নিতে পারবে কি এই নতুন এক্স৭১? কি মনে হয় আপনার?
No comments